Tag: টেন্ডার বাণিজ্য

  • এখনও সাবেক মন্ত্রীর এপিএস চক্রের নিয়ন্ত্রণে টেন্ডার বাণিজ্য

    এখনও সাবেক মন্ত্রীর এপিএস চক্রের নিয়ন্ত্রণে টেন্ডার বাণিজ্য

    সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের এপিএস হিল্টন কুমার সাহা। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার বাণিজ্য করেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বন্ধ হয়নি হিলটনের টেন্ডারবাজি। প্রাণি ও মৎস সম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা. আব্দুর রহিমের সহযোগিতায় সিন্ডিকেট করে এখনও কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিচ্ছেন হিল্টন কুমার সাহা।

    সূত্র বলছে, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতীফ বিশ্বাসেরর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির মূল হোতা ছিলেন তার একান্ত সচিব হিল্টন কুমার সাহা। মন্ত্রীর এপিএস হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সহজেই টেন্ডার বাণিজ্যের জন্য গড়ে তুলেছিলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। প্রাণি ও মৎস সম্পদ অধিদপ্তরের সকল টেন্ডার বাগিয়ে নিতে গড়ে তুলেছিলেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘এইচ এন এন্টারপ্রাইজ।’ কোনও কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে শত শত টেন্ডার দেয়া হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানকে৷

    ভুক্তভোগী ঠিকাদারদের অভিযোগ, টেন্ডারগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে সাবেক মন্ত্রীর এপিএস হিল্টনের প্রতিষ্ঠান ‘এইচ এন এন্টারপ্রাইজ’সহজে বাগিয়ে নিতে পারে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে হাসিনা সরকার পতনের পরও তার টেন্ডারবাজি ও সিন্ডিকেট চলছেই। প্রাণি ও মৎস সম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা. আব্দুর রহিমের সহযোগিতায় সে এখনও অবৈধবভাবে সব টেন্ডর বাগিয়ে নিচ্ছে। এমনকি অন্য কেউ কাজ পাইলেও হিল্টন ঝামেলা করে ওই কাজগুলো ছিনিয়ে নেয়।

    তুষার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. নাজির দ্য নিউজকে বলেন, আমরা যারা ঠিকাদার, তারা গত ১৪ বছরে এই অধিদপ্তরের কোনো টেন্ডার পাইনি। সব টেন্ডার এইচএন এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া হয়েছে। সরকার পতনের পরও হিল্টন ও তার প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার দেয়া হচ্ছে। ক’দিন আগে একটা টেন্ডার পেয়েছিলাম, পরে সেটাও হিল্টন জালিয়াতি করে নিয়ে গেছে।

    শিখা এন্টারপ্রাইজের উপদেষ্টা রবি বলেন, বিধিমালা না মেনে স্বৈরাচারী প্রভাবে এমনভাবে টেন্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে যেন কোনও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা না হয়। এছাড়াও টেন্ডার বাগিয়ে নিতে এমন কোনও অপকৌশল বাদ নেই, যা প্রয়োগ করেননি হিল্টন। এক্ষেত্রে কাজে লাগিয়েছেন তার নিজের প্রতিষ্ঠান এইচএন এন্টারপ্রাইজকে। টেন্ডার বাণিজ্যের পেছনে শেল্টার দিচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

    আওয়ামী দোসর ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ সহচর হিল্টনের সিন্ডিকেট ভেঙে বিধি মোতাবেক সকল দরপত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া চালুসহ হিল্টনের বাগিয়ে নেয়া দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্রের আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ ঠিকাদাররা।

    ঠিকাদার ব্যবসায়ী এইচএম আকবর বলেন, হিল্টনের এই টেন্ডার সিন্ডিকেটের কারণে সরকার প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বিগত ১৪ বছরে এই সিন্ডিকেটের জন্য সরকার কত হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সেটার হিসাব কেউ মেলাতে পারবে না। আমার দাবি, দরপত্রগুলো সাধারণ ঠিকাদারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। তাহলে সরকার ঠিকঠাক রাজস্ব পাবে। আর অধিদপ্তর হবে সিন্ডিকেটমুক্ত।

    এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের এপিএস হিল্টন কুমার সাহার সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, প্রাণি ও মৎস সম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা. আব্দুর রহিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে একটি ট্রেইনিংয়ে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।