মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কবে হবে, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিটি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে।

এসময় নার্সদেরও পরীক্ষা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও জানান, স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও পরীক্ষা নেওয়া হবে। করোনার মধ্যে এই পরীক্ষা বন্ধ থাকবে না।

শনিবার মানিকগঞ্জে ১০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বিকেলে জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান করা হয়। এতে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জমান সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, করোনার সময়ে ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাবে, তা ঠিক হবে না। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যসেবা দিতে হলে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। মানিকগঞ্জ ঢাকার খুব কাছের হলেও স্বাস্থ্যসেবায় খুব পিছিয়ে ছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর হলেও এ জেলার লোকজন খুব একটা উন্নয়ন পাননি। তবে এখন অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থার মান ভালো।

জাহিদ মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান অনেক এগিয়ে গেছে। প্রতিটি জেলা সদরের হাসপাতাল ২৫০ শয্যার হচ্ছে। ৩৮টি মেডিকেল কলেজ নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হবে। এটি প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার এবং তা বাস্তবায়ন করা হবে।

এছাড়া সম্প্রতি চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অনুমোদন হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হবে। প্রতিটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

করোনা মোকাবিলার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা দপ্তর লকডাউন ছিল। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্যসেবায় কোনো লকডাউন ছিল না। প্রতিটি মুহূর্তে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। অনেকেই অনেক সমালোচনা করেছেন। কিন্তু কাজটা তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই করেছে। প্রায় ১২০ জন চিকিৎসক মৃত্যুবরণ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত অন্য কর্মীরাও মৃত্যুবরণ করেছেন।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনা মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। ইউরোপ, আফ্রিকার দেশগুলো এমনকি ভারতও করোনায় বিপর্যস্ত। অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। মৃত্যুহারও পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় ভালো এবং সুস্থতার হার বেশি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। বাংলাদেশে যেন এই বিপর্যয় না ঘটে, আমাদের সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। করোনার প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনের চুক্তি করা হয়েছে। বাজারে এলেই আমরা তা পেয়ে যাব। তার আগে আমাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। করোনা প্রতিরোধ বা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কই বড় হাতিয়ার।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, ন্যাশনাল চক্ষু ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম মোস্তফা, সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) হাফিজুর রহমান, জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশাদ উল্লাহ প্রমুখ।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ এলাকায় একটি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *