1. islammamun1286@gmail.com : admin :
  2. alokitodhaka247@gmail.com : Saddam Alokito : Saddam Alokito
বহাল তবিয়তে কুমিল্লা বোর্ড সচিব॥ সুশীল সমাজের ক্ষোভ
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

বহাল তবিয়তে কুমিল্লা বোর্ড সচিব॥ সুশীল সমাজের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় : রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৫১ Time View

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জামাল নাসের ও সচিব নূর মোহাম্মদ-এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ বিএনপি ও জামাত পন্থী কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আগামী ৭ মাসের মধ্যে অবসরে যাওয়ার আগেই কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তাড়াহুড়া করে সনদ শাখায় ২জন, কম্পিউটার শাখায় ২জন, স্কুল রেজিস্ট্রেশন শাখায় ১জন, বাসা বাড়িতে ১জন নিয়োগ দিয়েছেন বলে বিশ^স্থ সূত্রে জানা যায়। এছাড়া তাড়াহুড়া করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে লোক নিয়োগের পায়তারা চলছে।
বিএনপি ও জামাত পন্থী কর্মচারীর নিকট থেকে বড় আকারের অর্থ ঘুষ গ্রহণ করে শিক্ষা বোর্ডের কয়েক জন কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়ায় পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীরা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বোর্ডে কর্মরত পদোন্নতি বঞ্চিতরা তাঁর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছেন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিব টাকা ছাড়া কিছু বোঝেন না। এখানে প্রশাসনিক কোনো শৃঙ্খলা নাই। তাঁকে এক্ষেত্রে সহায়তা করেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সহিদুল ইসলাম (চেয়ারম্যানের কথিত ভাই) ও উপ-সচিব সাফায়েত মিয়া (সচিব নূর মোহাম্মদের ভাগিনা) শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের এই দুই কর্মকর্তা। শিক্ষা বোর্ডকে তাঁরা বানিয়েছেন আয় ইনকামের উৎস।

সরকারি কর্মকর্তাদের তিন বছর পর পর বদলির বিধান থাকলেও কুমিল্লা বোর্ডের সচিব নূর মোহাম্মদ এক যুগের বেশি সময় ধরে বোর্ডে কর্মরত। তিনি ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি উপ-সচিব (একাডেমিক) পদে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তাকে সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে। উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর থেকে কর্মরত। উপ-কলেজ পরিদর্শক বিজন কুমার চক্রবর্তী ২০১০ সালের ৭ অক্টোবর থেকে একই পদে আছেন। উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহিদুল হক ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে বোর্ডে আছেন। উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চমাধ্যমিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল থেকে বোর্ডে কর্মরত। উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৬ মার্চ থেকে কুমিল্লা বোর্ডে কর্মরত।
বদলির আদেশ আসলেও অদৃশ্য হাতের ইশারায় তাদের বদলির আদেশ আটক করা হয়ে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি সংবাদ একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলেও শিক্ষা বোর্ডের দুর্নীতগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কিছুই না হওয়ায় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা দিন দিন সাহস বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি কুমিল্লার সচেতন মহলের। বর্তমানে শিক্ষা বোর্ড দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
‘১৪ ব্যাচের ২জন কর্মকর্তা প্রফেসর লেভেলের অন্যদিকে-২০ ব্যাচের একজন এসোসিয়েট প্রফেসর ওনাদের উপরের পদে চাকুরী করে’ যাহা অত্যন্ত লজ্জাকর বিষয়!
বাস্তবে দেখা যায়, কুমিল্লা বোর্ডে প্রফেসর লেভেলের লোকের অভাব নেই। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কেন জুনিয়র সহযোগী অধ্যাপক ২০ব্যাচের আসাদুজ্জামানকে (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) এনিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে তুলপাড়। যেন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনিয়ে কুমিল্লার শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বোর্ড চেয়ারম্যানের চাকরির সময়সীমা শেষের দিকে বেশকিছু পদে নিজের আত্নীয় স্বজন এবং অন্য পদগুলোতেও অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাউশি কলেজ ও প্রশাসন উইং প্রফেসর মোঃ শাহেদুল খবির চৌধুরী তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল (০১৭২০১৬৫৫৫৬) নাম্বারে এই ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেও তার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারি চাকুরীর বিধিমালায় এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

উল্লেখ্য যে, বোর্ডের প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় কোটি কোটি টাকার কেনাকাটার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অর্থ। পরীক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দূরের কথা প্রেষণ বাতিল পর্যন্ত করছে না। অথচ ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তিন বছরের বেশি এবং চাকরি জীবনে দুই বারের বেশি কোনো শিক্ষক প্রশাসনিক পদে থাকতে পারবেন না।
সাবেক এক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, বোর্ডের চাকরি সোনার হরিন। পৃথিবীর কোথাও এতো বোনাস নাই। বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সারা বছর যা বেতন পায় তার চেয়ে বেশি বোনাস পান। নিবন্ধন, ফরম পূরণ, পরীক্ষার প্রস্তুতি, পরীক্ষা, ফল প্রকাশের কাজে বোনাস দেওয়া হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গুদামে গেলেও ভাতা পান। বোর্ড নিজেরা আইন করে এসব সুবিধা নিচ্ছেন। এগুলো বাতিল হওয়া উচিত। বোর্ডে কেনাকাটায় সব চেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য যে, কুমিল্লা বোর্ডে মিটিং হলে বোর্ডে কর্মরত কর্মকর্তারা সিটিং এ্যালাউন্স পায়। যা সম্পূর্ণ বিধিঃবহিভূূত।
চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তরা মাসে ১০/১৫টা সম্মানী পায়। যাহা তাহার রুটিং মাফিক দায়িত্বের মধ্য পড়ে। আইনগত ভাবে তারা এ সুবিধা নিতে পারেনা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে- বোর্ডের একজন সাবেক অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এফএসএম শাখার দায়িত্বরত উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পুরাতন কাগজ বেচার নগদ টাকার সিংহ ভাগ ভাগ-ভাটোয়ারা হয় আর ছোট্ট একটি অংশ ব্যাংকে জমা হয়। অডিট কর্তৃপক্ষ এসকল বিষয়ে আপত্তি করলে সাধারন কর্মচারীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে অডিট নিষ্পত্তি করা হয়। কথিত আছে গত আগষ্টে বোর্ডে ৩সদস্য বিশিষ্ট অডিট টিমকে সচিবের নেতৃত্বে ৫০লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। এখানেই বুঝা যাই- কত কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে কুমিল্লা বোর্ডে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি (বাশিস) নজরুল ইসলাম রনি বলেন, বোর্ডে প্রেষণে একবার আসলে কেউ আর যেতে চান না। এখানে মধু আছে। শিক্ষার পুরো কাজ বোর্ডে হয়। টাকা না দিলে কোনো ফাইল নড়ে না। অভিজ্ঞতা না থাকলেও টাকার বিনিময়ে প্রধান পরীক্ষক বানানো হয়। ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও বোর্ড টাকা নিয়ে নির্বাচন দেয় না। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান, স্বীকৃতির অনুমোদন, শাখা খোলা, আসনবৃদ্ধির কাজ টাকা না দিলে বোর্ড করে না। শিক্ষকরা বোর্ডে গেলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী তিন বছরের বেশি সময় যারা কর্মরত আছেন তাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2018-2021 Alokito Dhaka
Design and Developed by Classical IT