ড্রেনে ভাসছে টাকা!

ড্রেনের পানিতে মাছ নয়, আজ ভেসে যাচ্ছে টাকা। ভিজে যাওয়া এসব নোট একেবারেই আসল এবং অক্ষত। লোকজন টাকা দেখে ড্রেনের পানিতে ঝাঁপ দিচ্ছেন। নোংরা পানিতে মাখামাখি হলেও আসল টাকা ধরার আনন্দই আলাদা এসব সাধারণ মানুষের কাছে। পানিতে মিলছে পাঁচ টাকা থেকে এক হাজার টাকার নোট!

ঘটনাটি শনিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী রেলওয়ে অফিসার্স রেস্ট হাউসের সামনের। এখানেই একটি ড্রেন থকে মিলছে এসব টাকা।

জানা গেছে, রেলওয়ের অফিসার্স রেস্ট হাউসের সামনের ওই ড্রেনে পুরনো কাগজপত্র ফেলে দেয় রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ। এসব পুরনো কাগজপত্রের ভেতর ছিল টাকা। তারা খেয়াল না করেই যেসব কাগজপত্র ওই ড্রেনে ফেলে দিয়েছিল তার ভেতরেই ছিল টাকা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দিলে সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে যায় বিষয়টা। খবর ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো জানান, আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছি। ভাবতেই পারিনি পুরনো কাগজের ভেতর টাকা থাকতে পারে। তিনি বলেন, কাগজগুলো ২০১০ সালের আগের। পচে গেছে। পোড়ানোর উপায় নেই। তাই ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ড্রেনে টাকা পাওয়ার খবর শুনে আমরাও সেখানে যাই। তারপর ঘটনা দেখি।

ড্রেনে নেমেছে কয়েকটি শিশু। ড্রেনের ওপরের পাঁচিলে উৎসাহী দর্শকদের ভিড়।

ড্রেনে টাকা ভাসছে এ খবর শুনে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে তারা টাকার রহস্য খুঁজে পান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রেনে এক হাজার, ৫০০, ১০০, ২০, ১০ এবং ৫ টাকার নোট পাওয়া গেছে। টাকা ভাসতে দেখে প্রথমে একজন এবং পরে অনেক মানুষ নেমে পড়েন ড্রেনে।

টুলু নামের এক ভাংড়ি বিক্রেতা তার কুড়ানো টাকাগুলো রেখেছিলেন পকেটেই। তিনি জানান, টাকাগুলো অফিসার্স মেসের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলে যাচ্ছিল। ড্রেনে ভাসতে দেখে তিনি নেমে পড়েন। আসলাম নামের আরেকজন জানান, তিনি এক হাজার ও ৫০০ টাকার নোট পেয়েছেন।

নগরীর উপশহর এলাকার রিকশাচালক সাকিল জানান, তিনি একটি ৫০০ টাকার নোট ও একটি ১০০ টাকার নোট পেয়েছেন।

ড্রেনের ভেতরে নেমে ময়লা উল্টে টাকা খুঁজছেন এক ব্যক্তি

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ নেই। তাই সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের ধারণা, এই প্রতিষ্ঠানের গত ১০ বছরের হিসাবে এসব টাকা খোয়া যাওয়া বা ঘাটতি থাকার খবর পাওয়া যায়নি। তাদের কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারীরও এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছে এগুলো দুর্নীতির টাকা। এ কারণে সড়ক পরিবহন গ্রুপ জটিলতা এড়াতে এ বিষয়ে মামলাও করেনি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *