কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ১নং কাশিনগর ইউনিয়নে জয়মঙ্গলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। সন্ত্রাসী কায়দায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিনেও মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি অভিভাবক প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল ও সফিকুর রহমান নামের দুই প্রার্থী।
জানা যায়, জয়মঙ্গলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদর দক্ষিণ উপজেলার বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ ইফতারুল ইসলাম ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমানের যোগসাজসে ২০/২৫জনের একটি স্বশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী দুই প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র ছিনিয়ে নেয়। তারা অভিযোগ করেন- মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে পিয়নকে দিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা নেন। পরবর্তীতে পিয়ন সভাপতিকে ফোন দিলে তার ছেলে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মজুমদার রাসেল ও বিএনপির শীর্ষ ক্যাডার, মাদক ব্যবসায়ী রাসেল মাহমুদ মজুমদার টিটুর নেতৃত্বে বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের মনোনয়ন পত্র ছিনিয়ে নেয় এবং হুমকি-ধমকি প্রদান করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘ ৭বছর যাবৎ মোখলেছুর রহমান মজুমদার এই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন। অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় চরম পর্যায়ে পৌছেঁছে এই প্রতিষ্ঠানটি। নিজস্ব ব্যক্তিকে সিলেকশন করে মনগড়া কমিটি করার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের। এছাড়াও নানান অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। উপেক্ষিত বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য সহ অভিভাবকবৃন্দ। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, কাশিনগর ইউনিয়নের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জয়মঙ্গলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। কিন্তু সময়ের সাথে সে ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারে নি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। নানান অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারনে হারাচ্ছে বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, কমছে শিক্ষার্থী। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়। লিখিত অভিযোগও করেছে অভিভাবকরা। উন্নয়ন ফি’র নামে লুটপাট আর বাণিজ্যের বাগাড়ে পরিণত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। তদ্বান্দীন ইউএনও মাসুদ রানার হস্তক্ষেপে গত বছর ৫২জন শিক্ষার্থী থেকে অবৈধ ভাবে নেয়া ৮৩২০০ শিক্ষার্থীদের ফেরত প্রদান করতে বাধ্য হন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের নথিপত্র গায়েবের ঘটনাও ঘটেছে এ প্রতিষ্ঠানে।
দীর্ঘ দিন এ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠান প্রধান নূর মোহাম্মদ ইফতারুল ইসলাম মাধ্যমে গোপনে কমিটির করে আসছেন। সম্প্রতি কমিটির মেয়াদ শেষ হলে মোখলেছুর রহমান মজুমদারকে এডহক কমিটির সভাপতি করা হয়।
এছাড়া নানান অব্যবস্থাপনার কারনে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ ইফতারুল ইসলামকে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি লাইন কেটে দেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হোসেনের সাথে কলা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
Leave a Reply