জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ছিল ১৮অক্টোবর। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড থেকে সেদিনের নিষ্পাপ শিশু রাসেলও রেহাই পায়নি।
জাতীয়ভাবে সারা দেশে একযোগে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোয় শেখ রাসেল দিবস-২০২২ পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ১৮তারিখ সকাল ৬টায় বনানী কবরস্থানে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু করা হয়।
অথচ জাতীয় এই দিবসটিতে কোন কর্মসূচি পালন করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা।
এই বিষয়ে কুমিল্লা বোর্ডের সচিব নূর মোহাম্মদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চিঠি পাওয়ায় বিলম্ভ হওয়াতে তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।
জাতীয় এই দিবসটি পালন করতে ব্যর্থ হওয়ায় মুক্তিযদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জামাল নাসেরকে ধিক্কার জানান। তারা বলেন, একজন ভাষা সৈনিকের সন্তান হয়ে-মুক্তিযদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হয়েও তিনি এই দিবসটি পালন করেননি। যা কুমিল্লা বোর্ডের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।
এই বিষয়ে আলোকিত ঢাকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পাওয়ায় ১৯তারিখ ভোর বেলায় ১টি ফুলের তোড়া দিয়ে শেখ রাসেল দিবস উদযাপন এই শিরোনামে ২০তারিখের সকল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। যা শেখ রাসেলের প্রতি চরম অবমাননা বলে মন্তব্য করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা।
জানা যায়, ১৯ তারিখ সকালে একটা ফুল এনে কোনরকম ফটোসেশান করে দায় এড়ানোর ফন্দি করেন বোর্ড কতৃপক্ষ। ঐ দিনের কোন পত্রিকায় তাদের এসংক্রান্ত কোন রিপোর্ট ছাপা হয়নি।
কিন্তু অত্যন্ত লজ্জাকর ও হাস্যকর ১৮ তারিখ শেখ রাসেল দিবস ঐ দিন তারা কোন প্রেস রিলিজ দিতে পারেনি। অথচ ২০ তারিখ ১৮ তারিখের প্রেস রিলিজকে বড় বিজ্ঞাপন আকারে পত্রিকায় ছাপিয়ে নিজেদের অপরাধকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। এতেই প্রমান হয়- কুমিল্লা বোর্ড কতটা অযোগ্য ও অথর্বদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ড এর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কখন ফুল দিলো আমরা জানিনা। তবে সকালে তড়িঘড়ি করে ফুল দিয়ে ফটোসেশান করা হয়েছে এটা আমরা শুনেছি।
যেখানে জাতীয়ভাবে সারা দেশে একযোগে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোয় শেখ রাসেল দিবস-২০২২ পালন করা হয়। অথচ জাতীয় এই দিবসটিতে কোন কর্মসূচি পালন করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, বোর্ডে প্রেষণে একবার আসলে কেউ আর যেতে চান না। এখানে মধু আছে। শিক্ষার পুরো কাজ বোর্ডে হয়। টাকা না দিলে কোনো ফাইল নড়ে না। অভিজ্ঞতা না থাকলেও টাকার বিনিময়ে প্রধান পরীক্ষক বানানো হয়। তিনি আরো বলেন, শেখ রাসেল দিবস নিয়ে কুমিল্লা বোর্ড যে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন অভিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাই। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী তিন বছরের বেশি সময় যারা কর্মরত আছেন তাদের সরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
সুশীল সমাজের অভিমত- কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জামাল নাসের তিনিতো এ্ই বোর্ড নতুন নয়। এরআগেও তিনি ২০১৫ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে কুমিল্লার উপ-পরিচালক হিসাব নিরীক্ষা পদে চাকুরী করেছেন। পরে কলেজ পরিদর্শক পদে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের মার্চে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে তার পদায়ন হয়।
আবার ২০২২ সালে ঘুরেফিরে তিনি কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন।
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি পালন করলেও কোন কর্মসূচিই পালন করেনি কুমিল্লা বোর্ড।
Leave a Reply